Hi

০৭:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জমি পেলেই গ্রাস করে মেঘনা গ্রুপ

বিশেষ প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় মেঘনা নদীর পাড়ঘেঁষে সাধারণ মানুষের জমি দখলের মহোৎসবে মেতেছে মেঘনা গ্রুপ। ভুয়া ও জাল দলিলের মাধ্যমে প্রকৃত জমি মালিকদের আড়ালে রেখেই নামে-বেনামে শত শত বিঘা জমি জবরদস্তি করে দখল নিচ্ছে ব্যবসায়ী গ্রুপটি। বাদ যাচ্ছে না সরকারি খাস জমি ও নদী দখল। দখলকৃত জমিগুলোর কোথাও চলছে বালু ভরাট আবার কোথাও তৈরি হয়ে গেছে স্থাপনা।
উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নে সরেজমিন পরিদর্শনে মেঘনা গ্রুপের এমন জমি গ্রাসের দৃশ্য দেখা যায়। চর রমজান সোনাউল্ল্যাহ, ছয় হিস্যা, জৈনপুরসহ বিভিন্ন মৌজার স্থানীয়দের শত শত বিঘা জমির দখলে এখন মেঘনা গ্রুপ। এছাড়া নদী ভরাট এবং সরকারি খাস জমিও বেশ ঔদ্ধত্যের সঙ্গে নিজেদের দখলে নিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জমি দখলে নিতে প্রথমে ভুয়া ও বেনামে দলিল করে নেয় মেঘনা গ্রুপ এবং এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলো। একজনের জমি আরেকজনের কাছ থেকে কিনে অথবা মূল জমি মালিকের অজ্ঞাতেই হাত করে নেওয়া হয় সেসব। এরপর বানানো হয় ভুয়া দলিল। জমি মালিকদের বাগে রাখতে ভোগানো হচ্ছে ভুয়া মামলা দিয়েও। সেই সঙ্গে আছে জীবননাশের হুমকি। উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বেপারী বলেন, ঝাউচরে আমার নিজের ৫০ বিঘা জমি ছিল। সেগুলো দখল করে তারা সেখানে পেপার মিলস, সুগার মিল এসব বানিয়েছে। আমার নামেই অন্তত ১০-২০টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে তারা। তাহলে একদমই সাধারণ মানুষের কী অবস্থা বুঝে নেন!
আনন্দবাজার সংলগ্ন পূর্ব দামোদরদী, নরসুলদী ও নয়াপাড়া মৌজার মেঘনা নদীর প্রায় ৫০ একর জমি দখল করে নিয়েছে মেঘনা গ্রুপ। নদীগর্ভের প্রায় ৭০০ ফুট দখলে নিয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করেছে মেঘনা গ্রুপ। মেঘনা গ্রুপের দখলের কারণে নদীর গতিপথ অনেকটা বদলে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আনন্দবাজারে মেঘনা গ্রুপের বর্জ্যরে কারণে মেঘনা নদীর পানি প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে।
যার জন্য ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে নদীর পানি। ফলে বসনদরদী, দামোদরদী, খামারগাঁও, মামলুতপুর, টেঙ্গারচর, খংসারদী, দামোদরদী ও মোবারকপুর এলাকার লোকজন রান্নাবান্না ও গৃহস্থালি কাজে পানির সঙ্কটে পড়েছেন। নদীর পানি দূষিত হওয়ায় সোনারগাঁও এলাকায় মাছের প্রজনন অনেকটা কমে যাচ্ছে।
সোনারগাঁয়ের মেঘনা লঞ্চ ঘাট, ঝাউচর, প্রতাপের চর ও কাদিরগঞ্জ এলাকায় বিশাল পরিমান মেঘনা নদী দখল হয়েছে এবং বর্তমানেও নদী দখল হচ্ছে। উপজেলার গঙ্গানগর এলাকায় পাওয়ার প্লান্ট এলাকায়ও বিশাল পরিমান নদী দখল চলছে। সেসব স্থানে বেশ সংখ্যক শিপইয়ার্ড গড়ে তোলা হয়েছে।

ট্যাগ :
© All rights reserved © Dikdarshon.net
কারিগরি সহযোগিতায়ঃ Meghna Host

জমি পেলেই গ্রাস করে মেঘনা গ্রুপ

আপডেট : ০৫:৫৩:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

বিশেষ প্রতিবেদক
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় মেঘনা নদীর পাড়ঘেঁষে সাধারণ মানুষের জমি দখলের মহোৎসবে মেতেছে মেঘনা গ্রুপ। ভুয়া ও জাল দলিলের মাধ্যমে প্রকৃত জমি মালিকদের আড়ালে রেখেই নামে-বেনামে শত শত বিঘা জমি জবরদস্তি করে দখল নিচ্ছে ব্যবসায়ী গ্রুপটি। বাদ যাচ্ছে না সরকারি খাস জমি ও নদী দখল। দখলকৃত জমিগুলোর কোথাও চলছে বালু ভরাট আবার কোথাও তৈরি হয়ে গেছে স্থাপনা।
উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নে সরেজমিন পরিদর্শনে মেঘনা গ্রুপের এমন জমি গ্রাসের দৃশ্য দেখা যায়। চর রমজান সোনাউল্ল্যাহ, ছয় হিস্যা, জৈনপুরসহ বিভিন্ন মৌজার স্থানীয়দের শত শত বিঘা জমির দখলে এখন মেঘনা গ্রুপ। এছাড়া নদী ভরাট এবং সরকারি খাস জমিও বেশ ঔদ্ধত্যের সঙ্গে নিজেদের দখলে নিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জমি দখলে নিতে প্রথমে ভুয়া ও বেনামে দলিল করে নেয় মেঘনা গ্রুপ এবং এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠানগুলো। একজনের জমি আরেকজনের কাছ থেকে কিনে অথবা মূল জমি মালিকের অজ্ঞাতেই হাত করে নেওয়া হয় সেসব। এরপর বানানো হয় ভুয়া দলিল। জমি মালিকদের বাগে রাখতে ভোগানো হচ্ছে ভুয়া মামলা দিয়েও। সেই সঙ্গে আছে জীবননাশের হুমকি। উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বেপারী বলেন, ঝাউচরে আমার নিজের ৫০ বিঘা জমি ছিল। সেগুলো দখল করে তারা সেখানে পেপার মিলস, সুগার মিল এসব বানিয়েছে। আমার নামেই অন্তত ১০-২০টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে তারা। তাহলে একদমই সাধারণ মানুষের কী অবস্থা বুঝে নেন!
আনন্দবাজার সংলগ্ন পূর্ব দামোদরদী, নরসুলদী ও নয়াপাড়া মৌজার মেঘনা নদীর প্রায় ৫০ একর জমি দখল করে নিয়েছে মেঘনা গ্রুপ। নদীগর্ভের প্রায় ৭০০ ফুট দখলে নিয়ে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করেছে মেঘনা গ্রুপ। মেঘনা গ্রুপের দখলের কারণে নদীর গতিপথ অনেকটা বদলে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আনন্দবাজারে মেঘনা গ্রুপের বর্জ্যরে কারণে মেঘনা নদীর পানি প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে।
যার জন্য ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে নদীর পানি। ফলে বসনদরদী, দামোদরদী, খামারগাঁও, মামলুতপুর, টেঙ্গারচর, খংসারদী, দামোদরদী ও মোবারকপুর এলাকার লোকজন রান্নাবান্না ও গৃহস্থালি কাজে পানির সঙ্কটে পড়েছেন। নদীর পানি দূষিত হওয়ায় সোনারগাঁও এলাকায় মাছের প্রজনন অনেকটা কমে যাচ্ছে।
সোনারগাঁয়ের মেঘনা লঞ্চ ঘাট, ঝাউচর, প্রতাপের চর ও কাদিরগঞ্জ এলাকায় বিশাল পরিমান মেঘনা নদী দখল হয়েছে এবং বর্তমানেও নদী দখল হচ্ছে। উপজেলার গঙ্গানগর এলাকায় পাওয়ার প্লান্ট এলাকায়ও বিশাল পরিমান নদী দখল চলছে। সেসব স্থানে বেশ সংখ্যক শিপইয়ার্ড গড়ে তোলা হয়েছে।